জেপুলিয়ান দত্ত জেপু,চকরিয়াঃ
কক্সবাজার জেলার চকরিয়ায় ১০ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ৩য় ধাপে সম্পন্ন হওয়ার পর ৪র্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২৬ ডিসেম্বর। এ ধাপে চকরিয়া উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নে ওই দিন ৪ জন চেয়ারম্যান পদে, বিভিন্ন ওয়ার্ডে ২৬ জন মেম্বার পদে ও সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধীতায় নামছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
এ নির্বাচনকে ঘিরে বরইতলী ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্বাচন যেন উৎসবে পরিণত হয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনায় মুখরিত। বরইতলী ইউনিয়নের বাড়ী ঘরের দেয়ালসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীদের পোস্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে। রাত-দিন মাইকিং করে বিভিন্ন স্লোগান ও নির্বাচনী প্রচারণায় মূখরিত পুরো এলাকা। ভোটারদের আকর্ষণের জন্য অনেক প্রার্থী ভোটারদের দ্বারে দ্বারে অনুনয়-বিনয় করে ভোট প্রার্থনা করছেন।
বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতাসীন হয়ে আসার পর আওমাীলীগ সমর্থিত প্রার্থী এটি এম জিয়াউদ্দীন চৌধুরী জিয়া পর পর দুই বার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিল। তিনি ক্ষমতায় থাকাকালীন বরইতলীর উন্নয়ন যতটুকু হয়েছে তার মধ্যে পশ্চিম বরইতলী হিন্দুপাড়ার তেমন উন্নয়ন হয়নি বলে দাবী করেন স্থানীয় অধিবাসীরা। আওয়ামীলীগের ভোট ব্যাংক নামে পরিচিত এ পাড়ার প্রায় ১৫’শ সংখ্যালঘু ভোটারদের দিকে তাকিয়ে থাকে সব দলের প্রার্থীরা।
অপরদিকে,বরইতলী ইউনিয়নে প্রায় ২২হাজার ভোটারের মধ্যে সব ওয়ার্ড মিলিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রায় ৩ হাজারের অধিক ভোট আছে বলে বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে। সংখ্যালঘুর এ ভোটের প্রতি বিভিন্ন দলের চেয়াম্যান প্রার্থীরা নিজের সমর্থন আদায়ের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। বিশেষ করে নৌকার প্রার্থী এটিএম জিয়াউদ্দীন চৌধুরী জিয়া এক প্রকার নিশ্চিন্তে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোটের উপর
আস্থা রেখে মুরব্বীদের দোয়া বা আশীর্বাদ কামনা করছেন।
পশ্চিম হিন্দুপাড়ার হিন্দু ভোটারের মধ্যে অনেকে এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন,আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী এ টি এম জিয়াউদ্দীন চৌধুরী জিয়া বিগত সময়ে নির্বাচিত হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে প্রায় ১৩ বছর বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছিল। কিন্তু পশ্চিম হিন্দু পাড়ার ভিতরের এক কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির বেহাল দশায় পড়ে থাকায় এ এলাকার বাসিন্দাদের দুঃখ প্রকাশ করছেন। রাস্তাটিতে ইট বিছিয়ে কিছুটা চলাচলের উপযোগী করলেও বন্যার পানিতে ভেসে প্রায় ইট উঠে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় গর্ত ও ভাঙ্গনের ফলে স্থানীয়দের চলাচল কষ্টকর হয়ে পড়ছে।
স্থানীয় অনেক ভোটার আক্ষেপের সাথে জানান,নির্বাচন কাছে আসলে প্রার্থীরা মিষ্টি কথায় মন ভুলিয়ে ভোট আদায় করে পরবর্তীতে ভুলে যায় উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ জনগনকে।
এবারও আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী এটি এম জিয়াউদ্দীন চৌধুরী জিয়া দলীয় নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে নামায় অনেকের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎসাহ-উদ্দীপনা।তিনি দীর্ঘ ১৩ বছর বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে থাকাকালীন পশ্চিম বরইতলী হিন্দুপাড়ার রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন তেমন হয়নি বলে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া। এ দিকে
বিএনপি সমর্থিত বর্তমান চেয়ারম্যান জালাল আহামদ সিকদার আনারস প্রতীক নিয়ে বিগত উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরে ভোটারের দ্বারেদ্বারে ভোট প্রার্থনা করতে দেখা গেছে।তিনি জানান,আমি ক্ষমতায় থাকাকালীন ব্যাপক উন্নয়ন করলেও অনেক কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। এবার সাধারণ জনগনের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে নির্বাচিত হলে অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করতে পারব বলে আশা প্রকাশ করছি।
অন্যদিকে,মহাম্মদ খালেকুজ্জামান চশমা প্রতীক নিয়ে ৩য় বারের মত চেয়ারম্যান পদে লড়তে যাচ্ছেন। সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান হিসেবে তার রয়েছে ক্লিন ইমেজ। নীতিনৈতিকতার দিক থেকে তার পরিচিতি ব্যাপক ও দরিদ্র অসহায়দের পাশে অবস্থান করায় এবার ভোটাররা ওনার প্রতি আস্থা আছে বলে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকেরা এ প্রতিনিধিকে জানান। তিনিও এবার সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবে বলে আশা ব্যাক্ত করছেন।
বরইতলী ইউনিয়নের পহরচাঁদা এলাকা থেকে আরো একজন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে আলহাজ্ব মাওলানা রফিক আহামদ সিদ্দিকী নামের এক জন সমাজ সেবক চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে প্রচারনা চালাচ্ছেন। বরইতলীর অধিকাংশ ভোটার ওনার সাথে পরিচিত নয় বলেও অনেকে এ প্রতিনিধিকে জানালেন। তবে বরইতলীবাসী এবার সৎ, যোগ্য ও গরীব দুখীর পাশে দাঁড়াতে পারে এমন প্রার্থীকে ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করতে চায়। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,ভোটাররা প্রশাসনের প্রতি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করার দাবী জানাচ্ছে।