ইসমাইল চৌধুরী
কেবল মূল প্রবেশপথ এবং দেয়ালের সৌন্দর্য বর্ধন করেই প্রবেশমূল্য বাড়ায় চট্টগ্রাম নগরের কাজির দেউরির ‘শিশুপার্ক’টি। পার্কটির ভিতরে রাইড পরিবর্তন, নতুন নতুন অত্যাধুনিক রাইড স্থাপনসহ বড় ধরণের সংস্কারের তেমন কোনো নজির চোখে পড়ছে না বলে জানিয়েছেন পার্কটিতে আসা দর্শনার্থীরা। তবে, এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পার্কের দায়িত্বরত ব্যবস্থাপক।
চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউরিতে সার্কিট হাউজের পাশে অবস্থিত শিশু পার্কটি। পার্কের পাশেই পাঁচ তারকা হোটেল ‘রেডিসন ব্লু’ এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত সার্কিট হাউজ। সামনে অবস্থিত এম এ আজিজ স্টোডিয়াম। সপ্তাহে সাত দিন সকাল ১০টা থেকে বিনোদনের জন্য নিজেকে খুলে রাখে পার্কটি। রাত সাড়ে ৮টায় বাজে বন্ধের ঘন্টা। তিন একর জায়গা নিয়ে বেসরকারি উদ্যোগে শিশু পার্কটি যাত্রা শুরু করে ১৯৯৪ সালে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন এক সময়ের মুক্তাঙ্গনটি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) শিশু বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য চুক্তি সম্পাদন করে ‘ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস’ নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে।
পার্কটিতে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, ভিতরে আধুনিকতার ছোঁয়া নেই। রাইডের সংখ্যাও তেমন বাড়েনি। ফলে দর্শনার্থীর সংখ্যাও দিন দিন কমছে। ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে চলছে পার্কটি। তবে, মাঝে মাঝে সামনের দেয়াল ও মূল প্রবেশপথ সংস্কার করেই প্রবেশমূল্য বাড়ায় পার্কটি। প্রবেশমূল্য ৫টাকা থেকে ১২গুণ বেড়ে এখন ৬০টাকা।
পার্কটি যুবক-যুবতিদের প্রেমের পরিবেশ ঠিকই ধরে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। শনিবার (২২ জানুয়ারী) পার্কটিতে সরেজমিনে পরিদর্শন করে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। এসময় দুই জোড়া যুবক-যুবতীকে খুবই আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া যায়। কোনো নিরাপত্তারক্ষীকে টহল দিতে দেখা যায়নি।
পার্কের জেনারেল ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন জনাব নাসির উদ্দীন। পার্কের অভ্যন্তরে যুবক-যুবতীতের অবাধে মেলামেশার অভিযোগ সম্পর্কে জি এম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘বর্তমানে দেশের অবস্থা, মানুষের নীতিনৈতিকতা এবং চরিত্র কোন পর্যায়ে গেছে তা জানেন। আমার নিরাপত্তা প্রহরীরা সবসময় টহল দেয়। আমি নিজেও প্রায় সময় টহল দিই। কেউ বেশি ইমোশনাল হয়ে গেলে তাকে তৎক্ষনাৎ আমরা বের করে দিই। এ ব্যাপারে আমরা সবসময় সতর্ক আছি’।
জেনারেল ম্যানেজার বলেন, ‘করোনা মহামারীরূপে কারণে পার্কে দর্শনার্থী কমে গেছে। আমরা প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন। দর্শনার্থী আকর্ষণের জন্য পার্কের আধুনিকায়ন চলছে, আগামীতেও চলবে। এখনো অনেক রাইড বসানোর অপেক্ষায় আছে। আরো কিছু রাইড আসার পথে। তবে পার্কের পাশে সার্কিট হাউজ থাকায় আমরা কোনো ধরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারিনা। ওখানে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা থাকেন’।