মোহাম্মাদ জুবাইর
চট্টগ্রামে সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ।তিন চিকিৎসকের নামে মামলা হলে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটির নির্দেশ। ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ রোগী পক্ষের। পেট ব্যথার রোগীকে দিনে পরপর দুইবার অপারেশন অতঃপর মৃত্যু ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় মৃত্যুর কারণ ও অভিযোগ।
গত ২০শে ডিসেম্বর মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-৫ এর বিচারক মো. সাদ্দাম হোসেন এ আদেশ দেন।গত১৮ ডিসেম্বর অভিযোগটি দেওয়া হয়।
সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষসহ তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা তদন্ত কমিটি,৩০দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে আদালতের নির্দেশ দেন।রোগী পক্ষের বাদীর অভিযোগ ও তথ্যসূত্রে জানা যায়,অপারেশনের দুদিন পর পপি আক্তার নামে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।অভিযোগে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকার সাউদার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা.মোহাম্মদ ইমরান হোসেন (৪৫), সহকারী অধ্যাপক ডা.আদনান বাচা (৪০) ও অধ্যক্ষ ডা. জয়ব্রত দাশকে (৫৫) বিবাদী করা হয়েছে। নিহতের স্বামী মীর আবদুল পিরু বাদী হয়ে অভিযোগটি দেন। তিনি নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকার বাসিন্দা।
অভিযোগে বাদী সূত্রে জানা যায়,আমার স্ত্রী পপি আক্তার গত ২২অক্টোবর সকালে পেটের ব্যথা অনুভব করলে বাসার পাশের সাউদার্ন মেডিক্যালে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাই। চিকিৎসক হাসপাতালে ভর্তি দেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথা শনাক্ত করেন এবং অতিদ্রুত অপারেশন করতে বলেন।
গত ২৬অক্টোবর সকাল ৯টায় রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন ঘণ্টা পর অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে চার নম্বর ওয়ার্ডে আনা হয়। নিয়ে আসার পর সারাদিন পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করে এবং রক্তপাত হয়। তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। ওই দিন রাত ১১টার দিকে পুনরায় তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে দ্বিতীয়বার অপারেশন করা হয়। দ্বিতীয় বার অপারেশনের পর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। অক্সিজেন সাপোর্ট প্রয়োজন হয়,প্রেশার কমে যায়। ঐ সময় চিকিৎসকদের সক্রিয় উপযুক্ত যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া,নিরবতা অবহেলা গাফলতি লক্ষ্য করি তাদের রেসপন্স তেমন একটা ছিল না। যার ফলে রোগীর অবস্থা আরো ভয়ানক অবনতি হতে থাকে।
পরের দিন ২৭অক্টোবর সকালে ডিউটিরত ডাক্তার জানায়, রোগীর শারীরিক অবস্থা খারাপ। তড়িঘড়ি করে ডিসচার্জ করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।আসংখ্যাজনক মুমুর্ষ অবস্থায় দ্রুত পাশে অবস্থিত মেরিন সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮অক্টোবর সকাল ৬টা ৫৪মিনিটে রোগীকে মৃত ঘোষণা করে কর্তব্যরত চিকিৎসক।
মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল হেলাল বলেন, চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুতে অভিযোগের ভিত্তিতে। অভিযোগ আমলে নিয়ে মহামান্য আদালত
আদেশ দিয়েছেন তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য। চমেক হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধানকে দায়িত্ব দিয়ে তিন সদস্যের কমিটি করে দিয়েছেন। কমিটির অপর দুই সদস্য থাকবেন চমেক হাসপাতালের মেডিসিন ও অ্যানেস্থেশিয়া বিভাগের দুই সহকারী অধ্যাপক। কমিটিকে আগামী ৩০দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা।
বিষয়টি জানতে চাইলে ডাক্তার আদনান বাচা বলেন,সেটা তো ওরা করছে রোগীপক্ষের বলা কথা
আমরা চিকিৎসা তো অবশ্যই দিছি। অলরেডি আমাদের ইন্টারনাল একটা তদন্ত হয়েছে। সেটা রিমোটও আমাদের কাছে আছে। রোগীপক্ষ কিভাবে সেটা পাবে এটাতো কনফেডেনশিয়াল।এটার জন্য এপ্লাই করতে হয়।
তদন্ত রিপোর্ট তো সবার হাতে দেওয়া হয় না। এ বিষয়ে রোগীর আমার সাথে কোন আলাপ হয়নি। সেটা তো রোগীপক্ষ কেউ আসলেই তো বলতে পারবো। না আসলে কিভাবে আমরা কথা বলতে পারবো। আমার কাছে আসে নাই। আমার নাম্বার কোথায় পেয়েছেন? আমি এখন একটু ব্যস্ত আছি একটু পরে আমি দিতে পারবো। এখন পারবো না।
উল্লেখ্যঃ প্রিয়জনের মৃত্যুর জেরে নিহত রোগীপক্ষ কোন মতেই মেনে নিতে পারছে না। কি কারনে?কোন রোগে? কেন মৃত্যু?তা কোন ক্রমে জানেন না ভুক্তভোগীর পরিবার।প্রিয়জনের শোকে বিচারের দাবিতে নিরুপায় হয়ে বাদী হয়ে আদালতে অভিযোগ করে তিন ডাক্তারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। রোগী পক্ষের বাদীর দাবি,ঘটনার শুরু থেকেই তার স্ত্রীর মৃত্যুকে অপু চিকিৎসার আড়ালে চিকিৎসার নামে সাজানো নাটকী কারসাজির মাধ্যমে ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টা করেছে।যার যথেষ্ট কারণ প্রমাণ বাদীর তথ্য চিত্র সরাসরি উপস্থিত স্বচক্ষে দেখা। এতকিছু থাকা সত্ত্বেও এমনকি বাদী থানায় অভিযোগ দিলেও সেই অভিযোগ কালক্ষেপন করে নেওয়া হয়নি অজানা রহৎস্য জনক কারণে।যা কিনা রোগী পক্ষে বাদী ভুক্তভোগী পরিবারের বুঝে আসে না কোনোমতেই। আমার স্ত্রীকে ভুল চিকিৎসা মরতে হয়ছে। এ পর্যন্ত তারা আমার প্রতি কোন সহানুভূতি দেখায়নি এবং আমার পাশে দাঁড়ায়নি। আমাকে বিন্দুমাত্র সান্ত্বনা পর্যন্ত দেয়নি। মামলার বিচার হবে? নাকি ঘাতক ডাক্তার গং ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পার পেয়ে যাবে? এমন আকুতি আশা হতাশা প্রশ্ন সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট। দৃষ্টান্ত হিসেবে শাস্তির দাবিতে আমর স্ত্রী অপচিকিৎসা জেরে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত বিচার পেতে আদালতে মামলা করেছি।এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা চাই।