মহেশখালীতে শ্বাশুড়িকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করে প্রবাসীর স্ত্রী
ইঞ্জিনিয়ার হাফিজুর রহমান খান, স্টাফ রিপোর্টারঃ মহেশখালী শাপলাপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড়ে দিনেশপুর এলাকায় কুতুবদিয়া পাড়ায় পরকিয়ার জের ধরে শ্বাশুড়িকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেছে প্রবাসী মোস্তাকের স্ত্রী।
দিনেশপুরের মৃত সালেহ আহমেদ এর স্ত্রী মদন শাইর (৬০) তাদের ছেলে-মেয়ে চার সন্তান। দুই ছেলে দুই মেয়ে তার মধ্যে বড় ছেলে মোস্তাক আহমদ ( ডাকনাম হালু) ২০১৮ সালে প্রবাসে চলে যায়। স্বামী প্রবাসে যাওয়ার পরে ১ বছর মধ্যে প্রবাসী স্ত্রী শাহিদা আক্তার (ডাকনাম শরবানু) নামে এলাকায় বিভিন্ন বদনাম ছড়াতে থাকে। তারপর থেকে শাহিদার সাথে একই বাড়িতে থাকতো তার শ্বাশুড়ি। কিন্তু বিভিন্ন সময় প্রবাসী স্ত্রী শাহিদা আক্তারের পরকিয়ার সম্পর্কের কথা জানতে পারে শ্বাশুড়ি, যা ছেলেকে বলতে পারতো না। তাই ছোট ছেলে মোহাম্মদ জালালের বাড়ি গিয়ে তার মোবাইল থেকে বেশ কয়েক বার পরকিয়ার কথা বলে দিয়েছে ছেলেকে। তার জন্য শ্বাশুড়ির উপর ক্ষুব্ধ ছিল খুনি শাহিদা। নানা সময় প্রবাসী ছেলে মোস্তাককে ফোনে পারিবারিক সমস্যার কথা বললেও ততটা গুরুত্ব দেয়নি । নানা কারণে অতিষ্ট হয়ে শ্বাশুড়িকে হত্যার পরিকল্পনা করে শাহিদা আক্তার।
২৭ই নভেম্বর মধ্য রাতে পরকিয়ায় করতে গিয়ে শ্বাশুড়ির হাতে নাতে ধরা পড়ে যায় প্রবাসী স্ত্রী শাহিদা আক্তার। তার অপকর্মে বাঁধা দেওয়ায় রাতেই তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়, গভীর রাতে তার শ্বাশুড়িকে মেরে ফেলার কথা বলার সময় শোনতে পায় বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়া কিছু জেলে। পরকিয়ার কথা দামাচাপা দিতে ওড়না দিয়ে প্রবাসীর স্ত্রী আর তার অবৈধ প্রেমিক দুইজন মিলে শ্বাশুড়িকে ফাঁসি দিয়ে মেরে ফেলে সেই দিন রাতেই এমন অভিযোগ করে মুখ খুলা শুরু করছে জেলাে সহ প্রত্যক্ষদর্শীরা ৷
দাদির মৃত্যু দেখে শাহিদার সন্তানদের কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে, কান্নার আওয়াজ শুনে পাশের বাড়ির একজন মহিলা দেখতে যায়। সে গিয়ে দেখতে পায় তার শ্বাশুড়ি মদন শাইরকেকে ফাঁসি দিয়ে মেরে ফোলেছে, খুনি শাহিদা খুন করে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল কিন্তু পাশের বাড়ির মহিলাটি বারণ করে করেছিল না পালানোর জন্য আর শিখিয়ে দেয় সবাইকে বলবে রাতে ঘুমের মধ্যে মারা গেছে। এই ঘটনাকে আড়াল করার জন্য ২৮ই নভেম্বর ভোর ৫.৩০ মিনিটে আত্মীয়স্বজনকে খবর দেয় রাতে ঘুমের মধ্যে মারা গেছে বলে। ২.৩০ মিনিটে জানাযা সম্পন্ন হয়। ৫ দিনের মাথায় ছোট ছেলের মোহাম্মদ জালালের বাড়িতে কোলকানি সম্পন্ন হয়।
সত্য কখনও গোপন থাকে না!
১৪ দিন পরে সত্য ঘটনা ফাঁস করে দেয় প্রত্যক্ষ সাক্ষী। সেই দিন রাতে কি কি ঘটেছিল তা বলে দিয়েছে ৯নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার নুরুল আমিনকে। প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী মোঃ জালালের বাড়িতে গিয়ে পরে সব খুলে বলে, কিভাবে মেরে ফেলেছে তাদের মাকে। সে সাক্ষী দিয়েও রাজি হয়েছে। সত্য ঘটনা যখন এলাকায় চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, তখন খুনি শাহিদা আক্তার বলে বলে মৃত্যু মদন শাইর নিজে নিজেই ফাঁসি খেয়েছে।
মোহাম্মদ জালাল এর সাথে কথা বলে জানা যায়, একমাত্র মায়ের খুনিদের আইনের আওতায় আনতে থানায় গিয়ে মামলা করার মতো সামার্থ্য নাই, আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায়। এতে আইনের সহযোগিতা চেয়েছে মোহাম্মদ জালাল। এই খুনি চক্রে বেশ কয়েক জন জড়িত বলে জানা যায়।