ইঞ্জিনিয়ার হাফিজুর রহমান খান, স্টাফ রিপোর্টারঃ শপথ গ্রহনের আগেই দলবল নিয়ে ইউপি ভবনে গিয়ে বেসরকারি সংস্থার ৫ মুর খুনিয়াপালং ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুল হক শপথ গ্রহনের আগেই দলবল নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন দখল করে কার্যক্রম চালালেন রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুল হক ।
গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন । এখনো নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশিত হয়নি । হয়নি শপথ গ্রহন ও দায়িত্ব হস্তান্তরও । পরিষদে এখনো দায়িত্বরত আছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল মাবুদ । এমন পরিস্থিতিতে বুধবার ( ২৪ নভেম্বর ) দুপুরে সমর্থকদের নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে গিয়ে একটি বেসরকারি সংস্থার অনুদানের অর্থ বিতরণ করেন নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুল হক । আইন অনুযায়ি তিনি পরিষদে গিয়ে এমন কার্যক্রম চালাতে পারেন না । তাই এনিয়ে জনমনে ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে । ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মুফিজুর রহমান জানিয়েছেন- হেলভেটাস নামক একটি বেসরকারি সংস্থা ১৭৫ জন শ্রমিকের মাঝে ৮ হাজার টাকা করে অনুদানের অর্থ বিতরণ করার কথা ছিলো বুধবার দুপুর ২ টায় ।
নিয়ম অনুযায়ি তিনিই ( সচিব ) এ অর্থ বিতরণ করার কথা । কিন্তু বিতরণের আগে মোবাইলে কথা বলে পরিষদ ভবনে আসেন নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুল হক । এক পর্যায়ে তিনিই ( আবদুল হক ) এসব অনুদানের অর্থ বিতরণ করেন । তিনি ( সচিব ) আরো জানান- বেসরকারি সংস্থা হেলভেটাস এর দায়িত্ব নিয়োজিতরাই নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানকে এ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন । যা তিনি জানতেন না ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা জানিয়েছেন- আবদুল হক নির্বাচনে জয়ী হলেও এখনো তিনি শপথ নেননি , দায়িত্বও হস্তান্তর হয়নি । তাই পরিষদে গিয়ে কার্যক্রম চালানো তাঁর উচিত হয়নি । এছাড়াও তিনি হেলভেটাস এর দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের পরিষদ চেয়ারম্যান না থাকায় অর্থ বিতরণ আপাতত না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন । করলেও পরিষদের সচিবকে দিয়ে করার কথা ছিলো । কিন্তু তারা কেন এমনটা করলো জানিনা । এ ঘটনায় হেলভেটাস এর সাথে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুল হক জানিয়েছেন- ‘ পরিষদ ভবন দখল করে কার্যক্রম চালানোর বিষয়টি সত্য নয় । একটি বেসরকারি সংস্থার আমন্ত্রণে আমি অনুদানের অর্থ বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করার জন্য গিয়েছিলাম । আমি সেখানে কিছু কথা বলে চলে আসি । পরিষদ তো সবার জন্য উন্মুক্ত । এখানে যেতে তো কারো বাধা নেই । কয়েকদিন পরেই তো আমাকে এখানে স্বসম্মানে দায়িত্ব দিয়ে চেয়ারে বসানো হবে । তাহলে দখল করার তো প্রশ্নই আসে না ‘ ।
বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল মাবুদ জানিয়েছেন- এখনো তিনি পরিষদে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন । কিন্তু ১১ নভেম্বর বিতর্কিত ফলাফলের মাধ্যমে আবদুল হক চেয়ারম্যান হিসেবে জয়ী ঘোষনা দেয়া হয় । কিন্তু এখনো এনিয়ে গেজেট প্রকাশ , শপথ গ্রহন ও দায়িত্ব হস্তান্তর না হওয়ার পরও আবদুল হক বুধবার দুপুরে লোকজন নিয়ে পরিষদ ভবনে প্রবেশ করেন এবং সেখানে তার কার্যালয় দখল করে পরিষদের কার্যক্রম চালাতে শুরু করেন । এসময় তিনি পরিষদের আওতাধীন একটি বেসরকারি সংস্থার ভাতা বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন এবং বক্তব্য রাখেন । যা সম্পূর্ণ বেআইনি । এসময় তিনি আমার ( মাবুদ ) সমর্থক হওয়ায় ভাতা নিতে আসা আবদুল কাদের , সখিনা বেগম সহ কয়েকজনকে মারধর করেন । দায়িত্ব না পাওয়ার আগেই যিনি এভাবে মার ও সন্ত্রাসী আচরণ শুরু করেছেন , তিনি দায়িত্ব পালনকালে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কিভাবে দেবেন , তা নিয়ে খুনিয়াপালংবাসী এখন শংকিত হয়ে পড়েছেন । এ ব্যাপারে তিনি প্রশাসনের আইনানুগ হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ।
এদিকে এ বিষয়ে জানার জন্য হেলভেটাস এর প্রকল্প পরিচালক সেলিম উদ্দিন এর সাথে বুধবার রাতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয় । কিন্তু তিনি এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে কোন কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান ।