নিজস্ব প্রতিনিধি
রাজশাহীর গোদাগাড়ী সীমান্ত থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে এক বাংলাদেশী কিশোরকে নির্যাতনের পর হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
নিহত কিশোরের নাম আব্দুর রহিম মাসুদ (১৮)। সে গোদাগাড়ী সীমান্তবর্তী দিয়াড় মানিকচক কামারপাড়া গ্রামের বাবলু রহমানের ছেলে।
নির্মম এই ঘটনার চার দিন পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত নিহতের লাশ ফেরত দেয়নি বিএসএফ। তারা সরাসরি পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার (১৯শে সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার দিয়াড় মানিকচক কামারপাড়া গ্রামের বাবলু রহমানের ছেলে আব্দুর রহিম মাসুদসহ চারজন কৃষি জমিতে কাজ করছিলেন। এক পর্যায়ে কাঁটাতারের বেড়া সংলগ্ন বাংলাদেশী সীমান্ত থেকে চারজনকে ধরে নিয়ে যায় বিএসএফ। পরে তিনজন পালিয়ে এলেও আব্দুর রহিম মাসুদকে বিএসএফের হারুপুর ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করা হয়।
বিএসএফের নির্যাতনে আব্দুর রহিম মাসুদ মারা যান বলে খবর পান তার বাবা বাবলু রহমান।
তিনি বলেন, গত বুধবার (২১শে সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত ওপারে হারুপুর বিএসএফ ক্যাম্পে মাসুদের মরদেহ পড়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২২শে সেপ্টেম্বর) থেকে মাসুদের মরদেহের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। বিএসএফ সদস্যরা তার ছেলেকে মেরে মরদেহ গুম করেছে বলে দাবি করেন তিনি।
নিহত মাসুদের লাশ ফেরত আনতে ইউপি চেয়ারম্যানসহ পরিবারের পক্ষ থেকে বিজিবির কাছে আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম ভোলা সীমান্তে মাসুদ নামের ওই কিশোরের নিখোঁজ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তারা সীমান্তের ওপার থেকে হোয়াটসঅ্যাপে স্থানীয় সূত্র থেকে নিহতের ছবি পেয়েছেন। সেই ছবি দেখে নিহত কিশোর মাসুদ বলে নিশ্চিত হয়েছেন। এরপর তিনি নিজেও বিজিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু এখনও লাশ ফেরত পাওয়া যায়নি।
এই বিষয়ে রাজশাহী বিজিবি-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সাব্বির আহমেদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মাসুদের পরিবারের অভিযোগ পেয়ে তারা বিএসএফের সংশ্লিষ্ট কমান্ড এলাকা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তারা কোনো বাংলাদেশি কিশোরকে ধরে নিয়ে যাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। এরপরও বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।