ইসমাইল চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর

চট্টগ্রামে লক্ষাধিক মানুষের অংশগ্রহণে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে হামদ-নাতে মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো মিলাদুন্নবীর(স.) ঐতিহ্যবাহী জুলুস। এবারই প্রথমবারের মতো জুলুসে নেতৃত্ব দেন পাকিস্তান থেকেছে আগত আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ(মজিআ) এর সুযোগ্য সন্তান আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ (মজিআ)।

বুধবার (২০ অক্টোবর) সকাল পৌনে ৯টায় নগরের মুরাদপুর আলমগীর খানকাহ্-এ-কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে বের হয় পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবীর (স.) জুলুস।
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন সড়ক হয়ে বিবিরহাট, মুরাদপুর, ২ নম্বর গেইট ঘুরে পুনরায় মুরাদপুর বিবিরহাট প্রদক্ষিণ করে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা সংলগ্ন মাঠে ফিরে আসে জুলুসটি।
এরপর মাহফিল শুরু হয়।

জুলুসকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করেছে নগরজুড়ে। জুলুসের পতাকা, ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, তোরণে সেজেছে নগরের মোড়, সড়কদ্বীপ ও সড়ক বিভাজক।

প্রতিবছরের মতো এবারও জুলুসের শৃঙ্খলা রক্ষায় ভোর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্স, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করেন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এসি (বায়েজিদ) মো. শাহ আলম দৈনন্দিন দেশ বার্তাকে জানান, মিলাদুন্নবীকে ঘিরে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত রয়েছে।
আনজুমান ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জুলুস শুরুর আগে সাংবাদিকদের বলেন, আল্লামা তৈয়ব শাহ (র.) ৭৪ সালে এ জুলুসের প্রবর্তন করেন। আমরা এ জুলুস সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমাদের এবারের বার্তা হচ্ছে মানুষের প্রতি ভালোবাসা। করোনাকালে আপনারা দেখেছেন গাউসিয়া কমিটি জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের দাফন কাফন ও সৎকারে সহযোগিতা করেছে।
আনজুমান ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মহসিন বলেন, দেশ, জাতির উন্নতি, বিশ্ব শান্তি ও করোনামুক্তির জন্য দোয়া করা হবে জুলুসের মোনাজাতে।
গাউসিয়া কমিটির অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার বলেন, বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও জুলুস সফল করার জন্য আমরা পীরভাই, সুন্নি জনতা, প্রশাসন, আইনশৃংখলা বাহিনীসহ সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। এ জুলুস সম্প্রীতির বার্তা বয়ে আনবে দেশে।

জুলুস ও মাহফিলকে ঘিরে মুরাদপুর থেকে জামেয়া পর্যন্ত বই, টুপি, তসবিহ, মেসওয়াক, পাঞ্জাবি, স্যান্ডেল, মোবাইল ফোনের সরঞ্জাম, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ রকমারি পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।