ইঞ্জিনিয়ার হাফিজুর রহমান খান, কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধিঃ দস্যুতা থেকে আলোর পথে ফিরে আসা আইয়ুব আলী (৪০) কোথায়? জানে না তার পরিবার। আজ ৩ দিন অতিবাহিত হলেও হদিস মিলে নাই আইয়ুব আলীর। তার সন্ধানে স্বজনদের মাঝে চলছে বুক ফাঁটা আর্তনাত! সোমবার ১৫ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০ টার সময় এরিপোর্ট লিখা পর্যন্ত তার কোন হদিস দিতে পারেনি কোন সংস্থা কিংবা তার পরিবার। অনেকে বলছেন তার প্রতিপক্ষের লোকজনের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে নাকি ভাড়াটিয়া লোকজনের মাধ্যমে অপহরণ করেছে। এমন কথার ও উদয় হচ্ছে।
গত ১৩ নভেম্বর দিবাগত রাত আড়াই টার দিকে সাদা পোশাকে ১০-১৫ জন লোক এসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে কক্সবাজার সদরের ডিককুলের ভাড়া বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় বলে জানান তার ভাই মোঃ আলী। তিনি আরও জানান, সকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন অফিসার ও দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে আইয়ুব আলী কে কেউ গ্রেফতার করে নি বলে জানান। এতেই চরম আতংক চলছে পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা।
উল্লেখ্য, গত ৬ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮ টার দিকে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার কালারমার ছড়া এলাকায় দুর্বৃত্তদের কুপে ও গুলিতে নিহত হন আলা উদ্দিন(২৭)। এই হত্যায় এজাহার ভুক্ত মামলায় আইয়ুব আলীকে আসামি করা হয়। সে মহেশখালীর কালারমার ছড়ার মোহাম্মদ শাহ ঘোনা গ্রামের মোহাম্মদ আব্দু হালিমের পূত্র। সে বর্তমানে কক্সবাজার সদর উপজেলার ডিককুল এলাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করত।
প্রসঙ্গত, মহেশখালীসহ উপকূলের ৯৬ জন জলদুস্য ২০১৯ সালের ২২ নভেম্বর মহেশখালীর কালারমার ছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে অস্ত্র ও গুলাবারুদ জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিল। এতেই আত্মসমর্পণ করে ছিলেন আইয়ুব আলীও। দীর্ঘদিন কারাভোগের পর জামিনে বেরিয়ে মা ও ভাইবোন নিযে কক্সবাজারস্থ সদর উপজেলার দক্ষিন দিককুলে বসবাস করে আসছেন।
তার পারিবারিক সদস্যরা জানিয়েছেন, আটক আইয়ুব আলীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হোক। না হয় প্রশাসনের কাছ থেকে আস্তা হারাবে সাধারণ আমজনতা।
আইয়ুব আলী স্ত্রী জেসমিন আকতার জানান, কালারমার ছড়ার চেয়ারম্যান তারেকের লোকজনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাদা পোশাকে ধরে নিয়ে গেছে। আমরা র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক অফিসে যোগাযোগ করা হলেও কোথায় তার সন্ধান পাচ্ছি না। হয়ত তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহয়তায় গুম করা হয়েছে। তাই আমি প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি, সে অপরাধী হলে যাতে আদালতে তুলে দেন।
মহেশখালী থানার ওসি আব্দুল হাই এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আইয়ুব আলী নামে একজনের বিষয়ে আমাদের থেকেই অনেকেই জানতে চেয়েছে। এই নামে কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়ছে কিনা আমাদের মহেশখালী থানা অবগত নয়।
আইয়ুব আলীর পরিবারের দাবী, আইয়ুব আলীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব, পরিবারের এমন দাবি মোতাবেক আমরা কথা বলি কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার লে. কর্নেল মো. খায়রুল ইসলাম সরকারের সাথে। তিনি জানান, আইয়ুব আলী নামে কোন আসামি এখনো গ্রেফতার হয়নি আমাদের হাতে। শুধু আইয়ুব আলী নয়, আলা উদ্দিন হত্যার সমস্ত আসামিকেই খুঁজছি আমরা।
পাশাপাশি আলাউদ্দিন হত্যা ছাড়াও জেলার অন্যান্য হত্যা মামলার আসামির বিষয়ে কোন তথ্য থাকলে সে ব্যাপারে র্যাব-১৫’কে সহযোগিতা করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধও জানান তিনি।