‘রজব’ শব্দের অর্থ সম্মানিত। জাহেলি যুগে আরবরা এ মাসকে খুবই সম্মানের চোখে দেখত। এ মাসের মর্যাদা ও পবিত্রতা রক্ষায় তারা নিত্য চলমান হানাহানি, মারামারি ও যুদ্ধবিগ্রহ বন্ধ করে দিত। এ জন্যই তারা এ মাসকে রজব নামে অভিহিত করেছিল।
ইসলাম এ মাসের মর্যাদার স্বীকৃতি দিয়েছে।
-পবিত্র কোরআনে এভাবে বলেছেন, ‘মহান আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাস বারোটি সেই দিন থেকে, যেদিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে চারটি মাস মর্যাদাপূর্ণ।’ (সুরা : তাওবা)
-মর্যাদাপূর্ণ মাস চারটি হলো : জিলকদ, জিলহজ, মুহাররম ও রজব। (বুখারি শরিফ )
রজব মাসের বড় বৈশিষ্ট্য হলো-এ মাস আল্লাহ প্রদত্ত চারটি সম্মানিত মাসের (আশহুরে হুরুমের) একটি। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাস সম্পর্কে খুব গুরুত্ব দিতেন।
রজবের চাঁদ দেখা গেলে রসূল (স.) কিছু বিশেষ আমল শুরু করতেন।-হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত আনাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, যখন রজব মাস শুরু হতো, নবী করিম (সা.) এ দোয়াটি পড়তেন,
-‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রামাজান।’
-‘হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করুন এবং আমাদের রমজান মাস পর্যন্ত হায়াত বৃদ্ধি করে দিন।’
এখন থেকে রমজান পর্যন্ত দোয়াটি খুব বেশি বেশি পড়া দরকার। বিজ্ঞজনদের মতে, ‘আশহুরে হুরুমের বৈশিষ্ট্য হলো, এসব মাসে ইবাদত-বন্দেগির প্রতি যত্নবান হলে বাকি মাসগুলোতে ইবাদতের তওফিক হয়। আর আশহুরে হুরুমে কষ্ট করে গোনাহ থেকে বিরত থাকতে পারলে অন্যান্য মাসেও গোনাহ পরিহার করা সহজ হয়।’
-রজবের প্রথম রাতের দোয়া কবুল হয়। পবিত্র হাদিস শরিফে রজবের প্রথম রাতে দোয়া কবুল হওয়ার সুসংবাদ এসেছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘পাঁচটি রাত এমন আছে, যেগুলোতে বান্দার দোয়া আল্লাহতায়ালা ফিরিয়ে দেন না, অর্থাৎ অবশ্যই কবুল করেন। রাতগুলো হলো- জুমার রাত, রজবের প্রথম রাত, শাবানের ১৫ তারিখের রাত, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার রাত।’ -মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক
হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরক এই মাস তথা সবসময় তোমার ইবাদত করবার তৌফিক দান কর। আমাদের গুনাহ ও ভুলসমূহ ক্ষমা করে দাও।।