ইসমাইল হোসেন চৌধুরী
স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্রের যদি কেউ সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে থাকে, সে হলো জিয়াউর রহমান। জিয়া ছিল পাকিস্তানি। তাঁর জন্ম পাকিস্তানে। তাঁর মা-বাবার কবরও পাকিস্তানে।
সোমবার (৩০ মে) দুপুরে নগরের দি কিং অব চিটাগাং-এ চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল হক সেলিম এমপি।
বিএনপি-জামায়াত কখনও গণতান্ত্রিক দল হতে পারে না-মন্তব্য করে তিনি বলেন, আজ যুদ্ধাপরাধী ও তাঁদের উত্তরসূরিরা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করতে চায়। কিন্তু তাদের সে স্বপ্ন কখনোই বাস্তবায়ন হবে না। নির্বাচনের মাধ্যমেই সরকার গঠিত হবে। আওয়ামী লীগ ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে বলেও আগাম জানিয়ে দেন তিনি।
এসময় তিনি বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ছয় দফা নিয়ে চট্টগ্রামে প্রথম সভা করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিন বছরের মধ্যে এশিয়া মহাদেশে সর্বশ্রেষ্ঠ সংগঠনে পরিণত হলো এ সংগঠন। বঙ্গবন্ধু ভোগের রাজনীতি করতেন না, ত্যাগের রাজনীতি করেছেন।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু নিজের জীবন বাজি রেখে দেশ স্বাধীন করেছেন শুধু দেশের মানুষের জন্য। আপনারা যারা যুবলীগ করতে চান আপনাদের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে জনগণের যেমন সম্পর্ক ছিল-ঠিক তেমনই। সবসময় যে কোনও বিপদে জনগণের পাশে এসে দাঁড়াতে হবে। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া যুবলীগ করতে হলে আপনাদের জনগণের সঙ্গী হতে হবে।
তিনি বলেন, দেশে করোনার মহামারী হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে। তারপরও দেশ সুন্দরভাবে চলছে জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে। বিশ্বে তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশেও পেয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা এ তেলের দাম জনগণের নাগালের মধ্যে রেখেছেন। শেখ হাসিনা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছেন। আজকে পদ্মা সেতু হয়েছে। এ সেতু নিয়েও কত কথা হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমস্ত কিছুকে পেছনে ফেলে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরি করেছেন। এ পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের অর্থনীতি বৃদ্ধি পাবে, কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। দেশে উন্নয়ন হয়েছে, যা দেশের মানুষ চোখে দেখছে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। আমেরিকা-কানাডায় যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেভাবে নির্বাচন হয়। শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশ কখনও পিছিয়ে পড়বে না। সামনে এগিয়ে যাবে।
এর আগে দুপুর ১২টায় বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এবং দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৯ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনে ৭৯৫ জন কাউন্সিলর অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে অতিথিসহ প্রায় ১০ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছেন।
২০০৩ সালে সর্বশেষ এ সম্মেলনের মাধ্যমে নগর যুবলীগের কমিটি গঠন করা হয়। এবার কমিটির দুই শীর্ষপদের জন্য ১০৭ জন আবেদন করেছেন। এরমধ্যে সভাপতি পদে ৩৫ জন আর সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য ৭২ জন আবেদন করেছেন।